Macbook Pro Servicing

আমার ম্যাকবুক প্রো সার্ভিসিং অভিজ্ঞতা

বন্ধুরা, অনেকদিন পর লেখতে বসলাম। আগেই কথা দিয়েছিলাম যে, ম্যাকবুক প্রো সাভির্সিং নিয়ে লেখবো। তো চলুন শুরু করা যাক।

হয়তো জেনে থাকবেন আমি মালদ্বীপ আর শ্রীলংকা ভ্রমনে গিয়েছিলাম। ঠিক তার ১ দিন আগে কোন কারন ছাড়াই আমার ম্যাকবুকটি চালু হচ্ছিলো না। পরে জানতে পেরেছিলাম যে, মাদারবোর্ডে সমস্যা ছিলো। কি অদ্ভুত! মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা। কি করা যায় ভেবে পাচ্ছিলাম না। এদিকে অনেক ইচ্ছা ছিলো ম্যাকবুকটি সাথে করে নিয়ে যাওয়ার। কিছু বুঝতে না পেরে ইউটিউবে একটা টিউটোরিয়াল দেখে খোলার চেষ্ঠা করেছিলাম। আমি ভালোমতই জানতাম যে, একটু এদিক সেদিক হলেই আমি ওয়ারেন্টি পাবো না। আমার সর্বমোট ওয়ারেন্টি ছিলো ১ মাস এর মতো।

খুলতে গিয়ে এক মহা কান্ড! আমার কাছে স্ক্রু ছিলো না। যা ছিলো তা দিয়েই ট্রাই করেছি। মাথায় কিছু ঢুকতেছিলো না। হাতে আছে মাত্র ১ দিন। সব টিকিট কাটা হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। যাইহোক, কিছুই করতে পারলাম না। এদিকে ৬ টি স্ক্রু এর মধ্যে প্রায় ৪ টি স্ক্রু এর মাথা খুচিয়ে নষ্ট করে ফেলেছিলাম। কি সমস্যা!

আমার ম্যাকবুক প্রো সার্ভিসিং অভিজ্ঞতা

My Macbook Pro 2016 with Touch Bar

অনেক কষ্ঠ নিয়ে তার পর দিন গেলাম মালদ্বীপ। ঘুরছি ঠিকই কিন্তু মনে শান্তি নাই। মালদ্বীপ আর শ্রীলংকা ঘুরে আসলাম। সাথে ছিলো আমার Dell এর একটা ব্যাকআপ ল্যাপটপ। দেশে ফিরে এসে আমি বুঝার চেষ্টা করছি কিভাবে সমাধান করা যায়। যেহেতু স্ক্রু খুলেছিলাম সেহেতু একটা ভয়ও কাজ করছে। হাতে আছে মাত্র ২০ দিন ওয়ারেন্টি। তবে আমি ভেতরের কোন যন্ত্রাংশে হাত দেই নি। আমি আ্যপলের অফিসিয়াল কাষ্টমাত্র কেয়ারে কথা বললাম চ্যাটের মাধ্যমে। তারা বললো যে শুধু স্ক্রু খুললেও আমি ওয়ারেন্টি পাবো যদি ভেতরে কোন আনঅথোরাইজড চেঞ্জ না করে থাকি।

কিছুটা আশা পেলাম। তবে প্রথমে নিয়ে গেলাম যমুনা ফিউচার পার্কে। Icenter না কি বাল! সবগুলি বেয়াদব বসে আছে এইটার সার্ভিস সাপোর্টে। আপনারা বিশ্বাস না হলে একবার তাদের ফেসবুক পেজ এর রিভিওগুলি দেখতে পারেন। তারা সরাসরি বললো যে, এই ম্যাকবুক আমরা রিসিভ ই করবো না। আপনি কেনো খুলসেন। আপনার এইটাতে ধরারই অনুমতি নাই। এহহহ! আমি যেমন ম্যাকবুকটি ভাড়া চালাইতেছি তাদের থেকে এনে!

আমি বললাম যে, আ্যপল সাপোর্ট বলেছে যে, আমি এটাতে ওয়ারেন্টি পাবো। তারা শুনলোই না। তারপর ফোন দিলাম এক্সিকিউটিভ মেশিনস এর সাপোর্টে। তৈহিদ ভাইয়া নামে একজনের সাথে কথা হলো। যথেষ্ট হেল্পফুল একজন মানুষ। খুব সুন্দরভাবে আমাকে বুঝিয়ে বললো। তিনি আমার ম্যাকবুকটি রাখলো। তারা আ্যপলকে জানাবে এটা, যদি আ্যপল রাজী হয় তাহলে তাদের ফ্রি ওয়ারেন্টি দিতে কোন আপত্তি নাই। আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম। ওয়ারেন্টি না পেলে নাকি ৮০,০০০ টাকার মতো লাগতে পারে।  🙁

কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায়। আমার ম্যাকবুকের মডেল হলো ২০১৬ টাচবার। এইটার মাদারবোর্ড নাকি ষ্টকে নাই। এবার সিঙ্গাপুরে যেখান থেকে তারা ইমপোর্ট করে সেখানেই নাকি নাই। এখন অপেক্ষা করতে হবে। কতদিন তা শিওর নাই। তারা মাল পাবে। অর্ডার দিবে। আসবে। তারপর সার্ভিসিং করবে। বাহ! কি দারুন।

অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু আমার তো সময় ছিলো মাত্র ২০ দিন। এর মধ্যেই যদি না আসে তাহলে তো ওয়ারেন্টি পিরিয়ড শেষ হয়ে যাবে। বেশ ভয়ে ভয়ে ছিলাম। যদিও আমি আ্যাপল সাপোর্টে জানােনার পর তারা বললো যে, আমি এই ওয়ারেন্টি পাবো মাল যত পরেই আসুক না কেনো। কারন আমি মেয়াদ শেষ হবার আগেই জমা দিয়েছিলাম। এবার আশান্বিত।

কিন্তু যদি তার পরেও সমস্যা হয়? তাই তৈহিদ ভাই পরামর্শ দিলো আ্যপল কেয়ার প্রটেকশন প্লানটি কিনে নিতে। যা দিলে ১ বছরের সাথে আরো এক্সট্রা ২ বছর ওয়ারেন্টি যুক্ত হয়। ভাবলাম ভালোই হবে। তাই ২৫,০০০ টাকা দিয়ে তাদের দিয়েই করিয়ে নিলাম। সময় লেগেছিলো ১ সপ্তাহ। তার পরের সপ্তাহে আমার প্রোডাক্ট আসে এবং তারা আমার ম্যাকবুকটি সাভিসিং করিয়ে দেয়। আমি আমার প্রিয় ম্যাকবুকটি দীর্ঘ ১ মাস পরে ফেরত পাই। তবে কোন ডাটা ফেরত পাইনি। মাদারবোর্ডের সাথে নাকি SSD ইনটিগ্রেটেড ছিলো। তাই সম্ভব হয়নি। আমার তাদেরকে আলাদা এক টাকাও দিতে হয়নি। সম্পূর্ন ফ্রি ওয়ারেন্টি পেয়েছিলাম।

পরিশেষে বলতে পারি যে, icenter Sucks, Executive Machines Rocks. Hi Five