জীবনে চলার পথে অনেক মানুষকে অনুসরন করতে হয়। সবার মধ্যে সব গুন থাকে না। তাই এক এক ক্ষেত্রে এক এক জনকে অনুসরন করি। আজ বলবো আমার একজন আইডল এর গল্প। যার খুব কাছাকাছি থেকে শিখেছি কিভাবে জীবনে চ্যালেন্জ নিতে হয়। কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয়। তিনি আমার শ্রদ্বেয় বড় ভাই আমিনুর ইসলাম। সিইও, ওয়েবকোডবিডি ও কোডেক্সকোডার।
সেটা বলতে গেলে একটু বিস্তারিত বলতেই হবে। কারো কাছ থেকে কোন অনুমতি নেই নাই। তাই ভুল ত্রুটি হলে আগেই ক্ষমাপ্রার্থী।
ছয়তলা একটা বিল্ডিং এর একটি ছোট রুমে ৪ জন বসে প্রতিদিন মিটিং করতাম। প্রচন্ড হাড়কাপানো শীত এর মাঝে হাত শক্ত হয়ে যেতো। তবও কোন এক অজানা আশায় অনুশীলন করতাম প্রতিদিন। উদ্দেশ্য একটাই, একটা আইটি ফার্ম গড়ে তোলা। তবে আমি বেশ হতাশ ছিলাম। কারন আইটি ফার্ম গড়ে তোলার মতো যথেষ্ট যোগ্যতা তখনো আমাদের কারো মাঝেই গড়ে ওঠেনি। আমি বার বার হাল ছেড়ে দিতাম। কিভাবে কি হবে তা আমি কোনভাবেই হিসাব মিলাতে পারতাম না। কিন্তু আমিনুর ভাইয়ের মতো একজন বড় মনের মানুষের কাছে যেনো কোন ব্যাপার ই ছিলো না। তিনি বলতেন, দেখো শামীম, যত কষ্ঠই পেতে হউক না কেন আমি একদিন একটা আইটি ফার্ম গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। আমি অবাক হয়ে তাকে দেখতাম। কিভাবে সম্ভব আমি জানতাম না।
তবে বেশ আগ্রহ হতো শেষ পর্যন্ত কি হয় তা দেখার। আমিও বেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ব ছিলাম। কিছু একটা তো হবেই। কিন্তু আর আর ফাউন্ডেশন এ সুযোগ পাওয়ায় তখন চলে গিয়েছিলাম কুষ্ঠিয়ায় রাসেল ভাইয়ের কাছে। এদিকে আমিনুর ভাই, দীপ্ত কর্মকার, ও বাবলু ভাই অনুশীলন করতো। কিভাবে কি করা যায়। তিন মাসে তারা একটা অফিস ও নিয়ে নেয়। বেশ ভালোভাবেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। একটা অফিস নির্ধারন করা হয়। নাম দেওয়া হয় ওয়েবকোড বিডি। আমিও পরে কুষ্ঠিয়া থেকে আসার পর ঢাকা চলে যাই, ওয়েবকোড এ।
কিন্তু আমার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা থাকার কারনে আমি ঢাকা ছেড়ে চলে আসি মাস দুয়েক পরে। জানি সেদিন আমিনুর ভাই খুব কষ্ঠ পেয়েছিলো। আমি তার জন্য আমিনুর ভাইয়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু ওয়েবকোড এর খোজখবর আমি সবসময়ই ই রাখি। নিজের ভালো লাগা থেকেই। প্রায় দেড় বছর পর আমিনুর ভাইয়ের ওয়েবকোড বিডি আজ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনপ্রিয় নাম। আমি যে বিষয়টি আলোকপাত করতে চেয়েছি, সেটি হলো আমিনুর ভাইয়ের সফলতা। চ্যালেন্জিং ব্যাপারটা। আমি সত্যি বলছি, আমি যদি তার জায়গায় থাকতাম, তবে কোনভাবেই তার সমস্যাগুলো সামাল দিতে পারতাম না।
যদি কোন চ্যালেন্জিং ব্যাপার আমার সামনে আসে তবে আমি আমিনুর ভাইয়ের কথা অবশ্যই একবার এর জন্য হলেও স্মরন করি। আমার আত্নবিশ্বাস অনেকগুন বেড়ে যায়। যারা ব্যাক্তিগতভাবে আমিনুর ইসলাম ভাইয়ের সাথে না মিশেছে তারা কখনোই এ ব্যাপারটি বুঝতে পারবে না। আমি তার খুব কাছাকাছি থেকে তার কাছে থেকে এ বিশেষ গুনটি আয়ত্ব করেছি। কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয় এবং তা বাস্তবায়ন করতে হয়।
কিছুদিন আগে আমিনুর ভাইকে ফেসবুকে ম্যাসেজ দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম, ওয়েবকোডের বর্তমান অবস্থা কি ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? আমি তার ম্যাসেজটি কপি করে দিয়ে দিচ্ছিঃ
ওয়েবকোডে এখন কতজন কাজ করেঃ
ওয়েবকোডে এখন কাজ করে ১৬ জন। অফিসে আর ৪ জন অনলাইনে সর্বমোট ২০ জন। খুব দ্রুত সংখ্যাটার পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা :
ডিসেম্বর ২০১৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সেরা ব্রান্ডিং কোম্পানী হবে ওয়েবকোড লিঃ ইনশাআল্লাহ। এমনকি ওয়াল্ড এ আমরা দেশকে তুলে ধরতে পারবো ২০১৯ সালের মধ্যে ইনশাআল্লাহ। ২০১৭ সালের মধ্যে নতুন ৫০০ দক্ষ জনবল তৈরী করবো ইনশাআল্লাহ এবং অন্তত আমাদের প্রতিষ্ঠানে নতুন আরো ১০০ জনকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে আমরা লিমিটেড কোম্পানী বেশকিছু উইং নিয়ে কাজ করছি ভবিষ্যতে গ্রুপ অব কোম্পানীতে মোড় নিবে ইনশাআল্লাহ।
আমিনুর ভাই, আপনি সফল কিনা ?
আলহামদুলিল্লাহ… সফলতার কথা বললে আমরা/আমি অনেক সফল। আর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পৌছাতে আরো ২ বছর সময় লাগবে কারন আমাদের উদ্দেশ্য ছোট নয়। অনেক বড়। ব্যবসা কোনদিনই ১/২ বছরে হয় না। অন্তত ৫ টা বছর সময় লাগে।
নিংসন্দেহে আমার অতি প্রিয় একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। সত্যিই আমি অনুপ্রেরনা পাই তার কথা ভাবলে। আমার দেখা সেরা স্বপ্নবাজ মানুষ, শ্রদ্বেয় আমিনুর ইসলাম ভাই। আমার স্বপ্ন দেখার আইকন। সত্যিই আমি তার কাছ থেকে চ্যালেন্জ নেওয়া ও স্বপ্ন দেখা শিখেছি। অনেক অনেক শুভকামন আমিনুর ভাইয়ের পথচলায়।
একে একে আমার সকল আইডল এর বিস্তারিত শেয়ার করবো। 😀