বন্ধুরা, আজ আপনাদেরকে বলবো GST (Goods and Services Tax) রিটার্ন এর সম্পর্কে। মূলত আমি এ ব্যাপারে জানতাম না। আমি মালৈশিয়া ও সিঙ্গাপুরের ট্যুরে যাওয়ার সময় আমার এক ভাইয়া আমাকে এ ব্যাপারে ধারনা দেয়। চলুন আপনাদেরকে আগে এ ব্যাপারে প্রাথমিক ধারনা দেই।
আরো পড়ুনঃ রাশিয়া ভ্রমণ গাইড ও আমার রাশিয়া ভ্রমণের গল্প
GST Refund কি?
GST এর পূর্ন রুপ হলো Goods and Services Tax এর রিফান্ড। অথাৎ, অনেক দেশের আইন অনুযায়ী দেশের ভ্রমনকারীদের জন্য এই ট্যাক্স মওকুফ করে দেওয়া হয়। এর মানে হলো যে, আপনে যে কোন কিছু কেনাকাটা করলেও আপনাকে কোন ট্যাক্স দিতে হবে না। তবে এইটা শুধু ভ্রমনকারীদের জন্যই প্রযোজ্য আমার জানামতে। ধরেন, আপনি মালৈশিয়া বা সিঙ্গাপুর ঘুরতে গেলেন। সেখানে ২ লাখ টাকার জিনিসপত্র কিনলেন। এখন আপনি ৬.৫% হারে জিএসটি রিফান্ড পাবেন। অর্থাৎ, ২ লাখ টাকা থেকে আপনি ১৩ হাজার টাকা রিটার্ন পাবেন। এতেই কম কিসে?
আরো পড়ুনঃ থাইল্যান্ড ভ্রমণ গাইড ও ভ্রমণ অভিজ্ঞতা
আমার অভিজ্ঞতাঃ
যদিও আমি মনে মনে ভেবেছিলাম মালৈশিয়া ট্যুর থেকে কিছুই কেনাকাটা করবো না তবও অনেক ভেবে চিন্তে ম্যাকবুক প্রো ১৩ ইঞ্চি টাচবার কিনার সিদ্ভান্ত নেই। শেষ পর্যন্ত কেনাই হয়ে যায়। পরে KL Center এর Machines এর শো রুম থেকে একটা ম্যাকবুক প্রো নেই। যার মূল্য পড়েছে প্রায় ১,৪৬,০০০ টাকা। যার রিফান্ড পাবো প্রায় ৮ হাজার টাকার মতো।
এ টাকাটা লস করার তো আর কোন মানে হয় না তাই না? যে উদ্দেশ্যে আপেলের শো রুম থেকেই সেলসম্যানকে বলে একটা জিএসটি রিটার্ন ফরম নেই। সেটা ফিল আপ করি। যত্ন করে রেখে দেই। তার পর আমি যখন মালৈশিয়া থেকে বাংলাদেশে চলে আসবো তখন মালৈশিয়ার এয়ারপোর্টে আমি খোজ করতে থাকি কোথায় রিফান্ড পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ বিদেশ ভ্রমন পরিকল্পনা যেভাবে সাজাবেন – শামীম হাসান এর ব্লগ
ইমিগ্রেশন পাস করার পর জিজ্ঞেস করে করে জানতে পারলাম যে, রিফান্ড নিতে হলে ট্রেনে করে বিমানবন্দরের ভিতর থেকেই KL2 তে যেতে হবে। তার পর ট্রেনে করে KL1 থেকে KL2 তে যাই। কোন ভাড়া লাগেনি। সেখানে নেমেই প্রথমে আপনার রিফান্ড ভেরিফাই করতে হবে।
যেজন্য আপনি যে জিনিসটি কিনেছেন সে জিনিসটি আপনার সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। আমাকে বললো ম্যাকবুক দেখাইতে। আমি তা খুলে প্যকেটটি দেখালাম। বললো ঠিক আছে। তার পর পেপারে সিল মেরে ক্যাশ কাউন্টারে যেতে বললো। আমি যথারীতে গেলাম। সেখানে থাকা ভদ্র এক অফিসার সমাদর করে আমাকে ডাকলো। সত্যিই তার ব্যবহার প্রশংসার দাবীদার।
আরো পড়ুনঃ মালদ্বীপ ভ্রমন গাইড – শামীম হাসান এর ব্লগ
বললে যে, স্যার আপনার রিফান্ড তো ৩৫০ রিঙ্গিত। এক্ষেত্রে আপনি ক্যাশ নিতে পারবেন না। আপনাকে ক্রেডিট কার্ডে নিতে হবে। আমি বললাম যে, আপনি আমাকে ৩০০ ই দিয়ে দিন আর বাকি ৫০ দরকার হলে কম দিন, তাও আমি ক্যাশ নিতে চাই। হেসে উত্তর দিলো, সরি স্যার। ইট ইস নট পসিবল। আপনাকে পুরুটাই নিতে হবে। তার পর বাধ্য হয়ে আমি আমার মায়ের নামে করা পেওনিয়ার কার্ডটি দেই। তিনি যাষ্ট পাঞ্চ করে দিলো। বললো হয়ে গেছে। টাকা পৌছে যাবে।
দেশে ফিরে আসার সম্ভবত ৭ দিন পর দেখলাম আমার মায়ের পেওনিয়ার কার্ডে ৭৬ ডলার জমা হয়ে গেছে। যদিও কোন হিসাবে ৭৬ ডলার দিয়েছে তা আমি বুঝতে পারিনি। তাও ৭৬ ডলার খারাপ কি। প্রায় ৭৬*৭৯= প্রায় ৬ হাজার টাকার মতো। আমি তো মনে মনে ভেবেছিলাম পাবোই না। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত পেলাম। পর অবশ্য ঐ ডলারগুলি পরবর্তীতে ফেসবুকের এড টেষ্ট করতে গিয়ে খরচ হয়ে গেছে। তারপরেও আমি বেশ খুশি যে, অন্তত রিফান্ড টা পেয়ে গেলাম।
এখন আপনি যা করতে পারেন তা হলো যে, আপনি যদি মালৈশিয়া বা সিঙ্গাপুর ঘুরতে গিয়ে সেখানে কোনকিছু কেনাকাটা করেন তাহলে আপনি আমার মতো করে জিএসটি রিফান্ড পেতে পারেন। কম হলেও আপনার লাভই হবে। কারন সবাই প্রায় ১-২ লাখ টাকার শপিং করে বিদেশ ঘুরতে গিয়ে। তাতে করে আপনে প্রায় ১২ হাজার টাকার মতো রিফান্ড পাবেন। ডায়ালগটা মনে রাখবেন সবসময়
“ফাও ফাও আলকাতরাও ভালো। 😀 “
আপনাদের ভ্রমন সুন্দর ও শুভ হোক
শামীম হাসান