মালদ্বীপ ভ্রমন করতে হলে আপনাকে আগে ২, ৩ টি দেশ ভ্রমন করা থাকলে ভালো হয়। থাকতেই যে হবে এমন নয়। থাকলে বেশি ভালো হয়। তাতে ইমিগ্রেশন পাস করতে পারবেন খুব সহজে। চলুন সরাসরি কাজের কথায় চলে যাই।
Contents
দেশ পরিচিতিঃ
মালদ্বীপ ভ্রমন করেতে হলে আপনার যা যা লাগবেঃ
১। পাসপোর্ট (ছয়মাসের মেয়াদ থাকতে হবে)
২। বিমান টিকিট (অবশ্যই রিটার্ন টিকিট সহ )
৩। হোটেল বুকিং (যে কয়দিন থাকবেন সকল দিনের জন্য, একদিনের জন্য করলে জবাবদিহি করতে হয়)
৪। পর্যাপ্ত ডলার (১০০০ ডলার বা তার বেশি )
৫। ভালো যোগাযোগ দক্ষতা (ইংরেজীতে)
৬। আপনার চাকরি বা ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (ট্রেডলাইসেন্স, ট্যাক্স রিটার্ন ইত্যাদি)
৭। ভিসা লাগে না। আপনি সকল কাগজপত্র ঠিক থাকলে মালদ্বীপ এয়ারপোর্ট আসার পর অন এরাইভাল ভিসা পাবেন।
এইগুলিও একটিও যদি বাদ যায় তাহলে আপনাকে ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত ও যেতে হতে পারে। তাই খুব যত্ন সহকারে সবগুলি জিনিস সাথে রাখবেন। কাগজের ফটোকপি সাথে রাখবেন প্রমান হিসাবে।
কেমন খরচ লাগতে পারেঃ
এটি বলা আসলেই মুশকিল। কারন এক জন এক এক টাইপের খরচ করে। আমি আমার ষ্টাইলে যা যা খরচ পড়েছে তা লিখতে পারবো শুধু ধারনা দেওয়ার জন্য। তবে মনে রাখবেন যে, একজন হলে খরচ বেশি পড়ে। দুইজন হলে কিছুটা সাশ্রয় হয়। যেমন হোটেল রুম ভাড়া ২ জনের জন্য ও একজনের জন্য সমান। তবে জেনে রাখা ভালো যে, মালদ্বীপ আপনি একরাতে লাখ টাকা সহজেই খরচ করতে পারবেন। কারন অনেক অনেক আইল্যান্ড আর লাক্সারী সব রিসোর্ট যা প্রতিদিন ২০০০ ডলার বা তার ও বেশিও আছে। আপনাকে হিসেব করে করে বের করতে হবে কোনটা সাশ্রয়ী। আপনি যদি রিসোর্টে রাতে থাকতে চান তাহলে অহেতুক খরচ অনেক বেশি। আপনি একটা হোটেলে থাকবেন ও রিসোর্টে শুধু ডে পাস প্যাকেজ নিয়ে যাবেন তাহলে খরচ ও কম হবে আর দেখতে পারবেন সবকিছু।
বিমান টিকিটঃ জনপ্রতি শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স রিটার্ন ফ্লাইট সহ ৪০,০০০ টাকার মতো। +- হতে পারে। এখান থেকে দেখে নিতে পারেন।
হোটেল বুকিংঃ দুইজনের থাকার জন্য প্রতি রাতের খরচ ৬৬ ডলার অন এভারেজ। ব্রেকফাষ্ট সহ। ( Hotel Beach Palace, Hulhumale). আমি সবসময় বুকিং করি অনলাইনে। এখান থেকে বুক করতে পারেন।
*** তো সব মিলিয়ে আপনি যদি জনপ্রতি ৪০,০০০ টাকা (বিমান ভাড়া) ও প্রতি দিনের জন্য ১০০ ডলার বাজেট রাখেন তাহলে বেশ ভালোমতোই থাকতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। তবে মনে রাখবেন যত বেশি রাইড ও রিসোর্ট নিবেন ততই খরচ বাড়বে যার কোন শেষ নেই। সেটা আপনার উপর নির্ভর করে।
আরো একটা কথা বলে নেওয়া ভালো যে, এখানে এসে আসল সৌন্দর্য হলো রিসোর্ট ভ্রমনে। যা অনেক ব্যয়বহুল। যদি সর্বমোট জনপ্রতি দেড় লাখ ও কাপলদের জন্য ২ লাখ টাকার নিচে আপনার বাজেট থাকে তাহলে অন্য দেশের কথা ভাবুন। মালদ্বীপ একটি বিখ্যাত টুরিষ্ট স্পট হওয়ার খরচ অনেক বেশি। তবে অনেক সুন্দর একটি দেশ।
ডলারঃ নগদ ডলার আপনি এজেন্সী থেকে এনডোর্স করিয়ে নেতে পারবেন বাংলাদেশে এয়ারপোর্ট থেকে। অথবা আপনি ক্রেডিট কার্ড ও এসডোর্স করিয়ে নিতে পারবেন আপনার ব্যাংক থেকে। আপনি চাইলে বিভিন্ন ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন ক্যাশ এর প্র্রাধান্য দেয় বেশি ইমিগ্রেশনে। তাই ক্রেডিট কার্ড নিলেও অন্তত ৫০০ ডলার ক্যাশ নিতে ভুলবেন না।
খাবার দাবারঃ
আমার ভালো লাগে। আপনি যদি সি ফুড ও মাছ পছন্দ করে তাহলে তো আপনার জন্য স্বর্গতুল্য হবে। নানান রকম মাছ পাওয়া যায়। তাছাড়া খাবার দাবার ও বেশ ভালো। বাংলাদেশীদের কোন সমস্যা হবার প্রশ্নই ওঠে না। দাম ও হাতের নাগালের মধ্যে। তবে বাংলাদেশ থেকে একটু বেশি।
হানিমুন হিসাবে মালদ্বীপঃ
এক কথায় দারুন। আপনি যদি হানিমুনে আসেন তাহলে ইমিগ্রেশনে বেশ ছাড় পাবেন। কারন সদ্য বিবাহিতরা তো আর এখানে থাকতে আসবে না। তারা ঘুরে আবার চলে যাবে। তাই এটি একটা প্লাস পয়েন্ট। আর আপনি যদি ভিসা ছাড়া কোন দেশে ঘুরে ইউরোপের ফিল পেতে চান তাহলে মালদ্বীপ অত্যন্ত উপযুক্ত একটি জায়গা। দেশটি ছোট হলেও উন্নত ব্যবস্থা আপনাকে মুগ্ধ করবে। আপনি যদি হুলেমাল নামক স্থানের বিচ প্যালেস নামক হোটেলে থাকেন তাহলে বাংলাদেশী আতিথেয়তায় থাকতে পারবেন ও বউ নিয়ে সন্ধাবেলা ফ্রিতে সাগর পারে আড্ডা দিতে পারবেন। আহা কি যে অনুভুতি! আমি অবশ্য একাই ছিলাম। কি আর করবো বলেন, বউ বেটি নাই। 🙁 আফসোস হয় অনেক 🙁
আপাতত এইটুকুই। মালদ্বীপ ভ্রমন গাইডের অন্য পর্ব লিখবো সময় পেলেই। এখান থেকে আপনার ভ্রমন পরিকল্পনা বানিয়ে নিতে পারেন।