Site icon শামীম হাসান শাকিল

সবার আগে জীবনের মানে বুঝতে হবে!

(Last Updated On: May 12, 2017)

বনানীতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের আসামী সাফাত ও সাদমান এর জন্য আমার খুব মায়া হচ্ছে। নাহ! তাদের করা অপরাধের জন্য মায়া হচ্ছে না। মায়াটা ভিন্ন এঙ্গেল থেকে হচ্ছে। চলুন ধর্ষন করার আগের দিন পর্যন্ত তাদের লাইফ নিয়ে কিঞ্চিত্‌ বিশ্লেষন করি।

প্রথমত, সাফাত একজন উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলতে পারেন সোনার চামিচ মুখে নিয়ে জন্মানের মতো। বাবা ছিলেন আপন জুয়েলার্স এর মালিক। বিশাল ব্যাপার। হয়তো জন্মের পর অর্থকষ্ট কি তা কোনদিন বুঝতেও পারে নি। সে হিসাবে সে সৌভাগ্যবান হয়েই জন্মেছে। কারন বাংলাদেশের প্রায় আনুমানিক ৭০ শতাংশ পরিবারের ছেলেমেয়েরা কোন না কোন ভাবে অর্থকষ্টটা উপলব্ধি করে। যা হয়তো তার কোনদিন করতে হয়নি। যেখানে লক্ষ লক্ষ তরুনের চাকরি খোজা নিয়ে মাথাব্যাথা হয়ে যায়, সেখানে তো তার জীবন পূর্ব প্রতিষ্ঠিত। দেশের এভারেজ ছেলেদের সবচেয়ে বড় দুই টেনশন ১। চাকরি ও ২। অর্থ। এ দুইটা নিয়ে তার কোন সমস্যাই ছিলো না। সে চাইলেই একটা সুন্দর জীবনের অধিকারী হতে পারতো। অথচ, আজ সে ধর্ষন মামলার আসামী হয় গ্রেফতার হয়েছে। কি নিকৃষ্ট! কি জঘন্য মানুষিকতার হলে কেউ জীবনের এ সামান্য মানেটুকুও বুঝতে পারে না ভাবতে পারেন?

দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন সোর্স থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সাফাত প্রেম করে বিয়ে করেছে। তার বউ ও একজন মডেল। খুব সম্ভবত, দুই বছর প্রেম করার পর বিয়ে করেছে। তার সাবেক বউয়ের দেওয়া তথ্যমতে, বিবাহিত জীবনে সাফাত এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা খুজে পায়নি। একজন ভালো স্বামীর মতোই পরিবারে সময় দিয়েছে। হঠাত্‌ একদিন বউকে ডিভোর্স লেটার পাঠায় যার কারন তার বউ নিজেও জানে না! তার কিছুদিন পর দুই তরুনীকে ধর্ষন করে আজ দেশের সবচেয়ে জঘন্য ব্যক্তিত্বে পরিনত হয়েছে। কি অদ্ভুত। কি জঘন্য! সে প্রেম করে বিয়ে করেছে, তার বিবাহিত জীবন ছিলো গোছালো। অথচ তাকে অন্য দুই তরুনীকে ধর্ষন করার মামলায় গ্রেফতার হতে হয়েছে। কি জঘন্য! কি বিকৃত মানুষিকতা! তার এ সুখী জীবনের মানে সে বুঝে ওঠতে পারে নি। প্রেম করে বিয়ে করার পর ও আবার ধর্ষন করার মতো বিকৃত রুচি একজন অমানুষেরই কেবল থাকতে পারে। সে প্রেম ভালোবাসার গুষ্ঠি উদ্ভার করে দিয়েছে একদম!!!

তৃতীয়ত, তার বাবা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমার ধারনা মতে, কোন বাবাই চায় না যে, তার ছেলে ধর্ষন করে দেশের হট টপিক হয়ে উঠুক আর নিজের ব্যবসায়ের বারোটা বাজিয়ে দিক। নিশ্চই জেনে থাকবেন যে, তার বাবার ব্যবসায়ের লেনদেনের হিসাবে চেয়েছে শুল্ক বিভাগ। ব্যাস। এইখানেই ভীষনভাবে ধরা খেয়ে যাবে তার বাবার ব্যবসা। একমাত্র কুলাঙ্গার না হলে কোন ছেলে তার লালসার কারনে বাবার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা নষ্ঠ করতে পারে না। ধিক্বার জানাই এ শুয়ায়ের বাচ্চাকে! ওরে ফাসি দিলেও তার শাস্তির কমতি হয়ে যাবে।

সর্বশেষ, তার সাবেক স্ত্রীর দেওয়া তথ্যমতে, সে সপ্তাহে পায় দুই তিন দিন রেইনট্রি হোটেলে রাত্রী যাপন করতো। আর সঙ্গী হিসাবে থাকতো অনেক মডেল নায়িকারা। হ্যা। কথাটি তিতা হলেও সত্যি যে, সে চাইলে তো আর মেয়ের অভাব ছিলো না। আমি ইন্সপায়ার করছি না। এইটা সত্যি যে, সে চাইলে আরো অনেক রাত্রী যাপন করতে পারতো যা হয়তো কোনদিন ধর্ষন খাতায় নাম উঠতো না (উচ্চ বিত্তদের কাছে এটা কোন বড় বিষয় নয়। আমি কি বুঝাতে চেয়েছি আশাকরি তা বুঝতে পেরেছেন)। অথচ, তাকে অন্য দুইজন তরুনীকেই মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ধর্ষন করতে হলো। ফলাফল? হয়তো অনেক বড় শাস্তি হবে। আমি চাইবো একটা নজীরবিহীন শাস্তি যেনো তাদের দেওয়া হয়। এই কুলাঙ্গারদের বেচে থেকে কোন লাভ নেই।

বিকৃত রুচি মানুষকে কতটা নিচে নামিয়ে দেয় তা একবার ভাবতে শিখুন। নিজের জীবনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে না পারলেই আপনার মাঝে অসভ্য ও বিকৃত রুচির জন্ম নিবে। আল্লাহ আপনাদের সবাইকে ও আমাকে এইসব বিকৃত রুচি থেকে বাচিয়ে রাখুক। আমীন।

কিছু নিউজের লিংকঃ
https://www.youtube.com/watch?v=jqRpkfExVqg&t
https://www.youtube.com/watch?v=XTUW79T34IQ
https://www.youtube.com/watch?sns=fb&v=NFbwuCaUMZ4

Exit mobile version